Tumgik
#সম্রাট আওরঙ্গজেব
srkshazu · 3 months
Text
হায়রে মোদের রাজা, চুষে খায় দূর্বল প্রজা!!!
Tumblr media
সম্রাট আওরঙ্গজেব ৪৯ বছর ধরে ভারত শাসন করেছেন। তাঁর সাম্রাজ্যের আয়তন ছিল ৪০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। বলতে গেলে, ভারতবর্ষের প্রায় সম্পূর্ণ এলাকা ছিল তার রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত। প্রজার সংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৮০ লক্ষ।
আওরঙ্গজেব বছরে রাজস্ব আদায় করতেন ৪৫০ মিলিয়ন ইউ এস ডলার।
ঐ সময়ে ফ্রান্সের সম্রাট ছিলেন চতুর্দশ লুই। লুই এর চেয়ে আওরঙ্গজেব এর রাজ্যে দশগুণ বেশি রাজস্ব আদায় হত।
তাঁর অধীনে ভারতবর্ষের অর্থনীতি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনীতি।
১৭০০ সালে তিনি ভারতবর্ষের অর্থনীতিকে ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করেন। ভারতবর্ষের জিডিপি ছিল পুরো পৃথিবীর জিডিপির চার ভাগের এক ভাগ।
১৭০৭ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান আওরঙ্গজেব ৮৮ বছর বয়সে নিজের সম্পত্তির একটা উইল তৈরী করলেন।
মৃত্যুর পরে উইলে দেখা গেল- তাঁর কাছে ১৪ রুপি আর নিজ হাতে বোনা কিছু টুপি আছে।
এগুলো বিক্রি করে তাঁর জানাযা আর দাফনে খরচ করতে বলেছেন। আর সারাজীবন কুরআন শরীফ নকল করে ৩০০ রূপি জমিয়েছেন।
এই টাকাগুলো গরীবদের মাঝে দান করে দিতে বলেছেন।
দরবার আর রাজকোষে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল- উইলের বাইরে সম্রাটের কোথাও কোনো সম্পদ নেই।
সংগৃহীত।
0 notes
khulnabazar · 2 years
Text
ইতিহাসের এই দিনে
নিউজনাউ ডেস্ক: আজ বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০২২। নিউজনাউয়ের পাঠকদের জন্য ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যুসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো: ঘটনা: ১৬৫৮: মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৭১৩: রাশিয়ার জার পিটার দ্য গ্রেটের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী পারস্য উপসাগরের পানিসীমা পর্যন্ত নিজেদের সাম্রাজ্য। ক্রমবিস্তারের লক্ষ্যে জর্জিয়াকে…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
crime-protidin-blog · 6 years
Text
চাঁদপুরে সম্রাট আওরঙ্গজেব আমলের মসজিদের সন্ধান লাভ
ক্রাইম প্রতিদিন : চাঁদপুরে জঙ্গল পরিষ্কার করার সময় সম্রাট আওরঙ্গজেব আমলের প্রাচীন একটি মসজিদের সন্ধান পাওয়া গেছে । চাঁদপুর সদরের রামপুর ইউনিয়নে ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদার বাড়ি এলাকায় মসজিদটির অবস্থান রয়েছে। বুধবার (২৯ আগস্ট)বিকেলে মসজিদটির দৃশ্যমান হয়। বৃহস্পতিবার (৩০আগস্ট) শ্রমিকরা সেখানে কাজ করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ক্রাইম প্রতিদিনকে বলেন, ‘তথ্য পেয়ে আমি মসজিদটি দৃশ্যমান করার…
View On WordPress
0 notes
anyodhara24 · 7 years
Photo
Tumblr media
শিক্ষকের কাছে লেখা সম্রাট আওরঙ্গজেবের একটি দুর্লভ চিঠি অন্যধারা২৪ : আওরঙ্গজেব পিতা শাহজাহান ও তার সহোদরদের সাথে উত্তরাধিকার প্রশ্নে দীর্ঘ যুদ্ধ ও রক্তাক্ত কলহের পর ১৬৫৮ সালে হিন্দুস্তানের সম্রাট হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন। সুদীর্ঘ ৫০ বছর বিচক্ষণতা, শাসনকর্মে ন্যায়নিষ্ঠা ও সামরিক সাফল্যের সাথে রাজত্ব করেন। তিনি কখনো তার শৈশব ও প্রাক-যৌবনকালে প্রাপ্ত শিক্ষাকে সম্রাট হিসেবে তার সাফল্যের ভিত্তি বলে মনে করতেন না। তিনি কখনো তার এ মনোভাব গোপন করতেন না। সিংহাসনে আরোহণের স্বল্পকাল পরে তার এক তারুণ্যের শিক্ষক তার কাছে খেলাত ও অর্থসম্মানীর প্রত্যাশায় আগমন করলে সম্রাট আওরঙ্গজেব লিখিতভাবে পত্রের মাধ্যমে তাকে কঠোর ভাষায় জানিয়ে দেন, তিনি ওই শিক্ষকের (সম্ভবত মোল্লা শাহে) কাছে মোটেই ঋণী নন। পত্রটি নিম্নে উদ্ধৃত করা হলো। উদ্ধৃত পত্রটিকে বলা যেতে পারে- তরুণদের জন্য অবশ্যপাঠ্য প্রকৃত শিক্ষাসম্পর্কিত একটি সন্দর্ভ।
0 notes
dailyshabdonagor · 3 years
Text
২১ জুলাই: আজকের এই দিনে
২১ জুলাই: আজকের এই দিনে
ঘটনাবলী ১৬৫৮ সালে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৭১৩ সালে রাশিয়ার জার পিটার দ্য গ্রেটের ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুযায়ী পারস্য উপসাগরের পানি সীমা পর্যন্ত নিজেদের সাম্রাজ্য ক্রমবিস্তারের লক্ষ্যে জর্জিয়াকে ইরান থেকে পৃথক করার প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিল। ১৭৯৮ সালে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট মিসরের যুদ্ধে জয়লাভ করেন । ১৮৩১ সালে নেদারল্যান্ডের অন্তর্গত বেলজিয়াম স্বাধীনতা লাভ করে। ১৮৬৬ সালে লন্ডনে…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
americabangla · 3 years
Text
জাহানারা মসজিদটির নিচে কী আছে তা জানতে জরিপের আবেদন
জাহানারা মসজিদটির নিচে কী আছে তা জানতে জরিপের আবেদন
আমেরিকা বাংলা ডেস্ক : আইনজীবী শৈলেন্দর সিং হিন্দু দেবতা কৃষ্ণের বংশধর দাবি করা মনীশ যাদব নামে এক ব্যক্তি এবং দেবতা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমানের পক্ষে এ পিটিশন দায়ের করেছেন। উত্তরপ্রদেশের আগ্রায় অবস্থিত আগ্রা জামে মসজিদ বা জাহানারা মসজিদটির নিচে কৃষ্ণের মূর্তি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। পিটিশনে বলা হয়েছে, মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব মথুরা জামানস্থান মন্দিরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সেখান থেকে…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
topnews24online · 3 years
Text
চিরকুমারী এই রাজকন্যার জীবনের শেষ দিন কাটে কারাগারে
চিরকুমারী এই রাজকন্যার জীবনের শেষ দিন কাটে কারাগারে
টপ নিউজ ডেস্ক:  আওরঙ্গজেব বা আলমগীর ছিলেন মোগল সম্রাট। তার মৃত্যুর পর থেকে আর কোনো মোগল সম্রাট মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। তিনি খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন এবং নিজের হাতে কোরআন শরীফ লিখে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ১৭০৭ সালের ৩রা মার্চ তিনি ইন্তেকাল করেন। তার নিজের হাতে করা উইলখানি তার মৃত্যুর পর তার বালিশের নীচে পাওয়া যায়। তাছাড়া আহকাম-ই-আলমগিরিতে তার আরেকটি উইল পাওয়া…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
paathok · 4 years
Photo
Tumblr media
New Post has been published on https://paathok.news/118391
দেশব্যাপী ধর্ষণসহ সকল অপকর্মের সাথে সরকারের মদদ রয়েছে- ডা. শাহাদাত
.
দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম।
আজ সোমবার (১২ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও চসিক মেয়র প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেছেন এসব অপকর্মের পেছনে সরকারের মদদ রয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতিসংঘ পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এই ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে। এর চেয়ে লজ্জা কী হতে পারে একটা জাতির জন্য?
ডাঃ শাহাদাত বলেন, ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যেই স্বীকার করে নিয়েছেন এই ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও নিপীড়নের পেছনে সরকারী দলের মদদ রয়েছে। তাই দেশ পরিচালনায় বার্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার দিকে যান। যদি না যান, জনগণ জেগে উঠছে। আপনাদের চলে যেতে বাধ্য করবে।
দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে মন্তব্য করে ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, ধর্ষণ ও নারী-শিশু নির্যাতনের মতো বিষয়গুলো এই অবৈধ সরকারের ছত্রছায়ায় নিরন্তর বিষয় হয়ে গেছে। এগুলো এখন একটি মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। আজকে এই যে ধর্ষণ এটা শুধু একজন নারীকে ধর্ষণ না, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধর্ষণ। বর্তমানে মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। আজকে দ্রব্যমূল্যের চরম উর্ধগতি। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন। কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত না। রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি করে তারা ক্ষমতায় বসে আছে। তিনি বলেন, আজকে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ থামলে চলবে না। এই প্রতিবাদ ছড়িয়ে দিতে হবে দেশের প্রতিটি এলাকায়। এবার প্রতিবাদ নয় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যত বাধা-বিপত্তিই আসুক।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বাংলাদেশে যে পরিস্থিতিগুলো চলছে, এই পরিস্থিতি সভ্য সমাজের নয়। এটা সম্পূর্ণ একটি অসভ্য সমাজে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী আজকের আওয়ামী লীগ সরকার। তারা এই সমাজে ভয়ঙ্কর নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সারাদেশে যারা ধর্ষণ, অত্যাচার, অবিচারের সাথে যুক্ত রয়েছে তারা এই সরকারের আশ্রয় প্রশ্রয় পাচ্ছে এবং এ কারণেই তারা আরো বেশি অপকর্ম করতে উৎসাহিত হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, মানুষের অধিকারকে ধ্বংস করেছে। একটা মানুষের যে নূন্যতম বেঁচে থাকার অধিকার, সে অধিকার থেকে সরকার বঞ্চিত করেছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।
চট্টগ্রাম মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ডাঃ বেলায়েত হোসেন ঢালীর পরিচালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, ফোরামের যুগ্ম আহবায়ক ইন্জিনিয়ার সেলিম মোঃ জানে আলম, বিএনপি নেতা ইন্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, মোঃ কামরুল ইসলাম, মন্জুর রহমান চৌধুরী, হামিদ হোসাইন, ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য জেলী চৌধুরী, ড্যাব নেতা ডাঃ আবুল কালাম, ডাঃ কাজী মাহবুব আলম, ডাঃ এস এম সরোয়ার আলম, আবদুল হালিম শপন, মোঃ ইদ্রিস আলী, আলমগীর নুর, আলী আজম, আলহাজ্ব জাকির হোসেন, নারী নেত্রী আখি সুলতানা, লায়ন অহিদুল ইসলাম সিকদার, হাজী নুরুল হক, মনিরুজ্জামান টিটু, মোঃ মুছা, জসিম উদ��দীন চৌধুরী, জিয়াউর রহমান জিয়া, জমির উদ্দীন নাহিদ, আওরঙ্গজেব মোস্তফা সম্রাট, লায়ন আনোয়ার হোসেন উজ্জল, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক হাসান, ডাঃ প্রতীক, সাজ্জাদ হোসেন খান, আসিফ চৌধুরী লিমন, ফখরুল ইসলাম শাহীন, এন মোঃ রিমন, আরশে আজিম আরিফ প্রমূখ।
0 notes
Text
ইতিহাসের পাতা থেকে,আগ্রা ফোর্ট!
আগ্ৰা দুর্গ বা কেল্লা মোঘল রাজবংশের রাজকীয় আবাস। এটি মোগল স্থাপত্যের এক অসাধারন নিদৰ্শন। এই কেল্লা ১৯৮৩ সালে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এর অন্তৰ্ভুক্ত হয়। ভারত এর আগ্রার যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত দুৰ্গটি। আগ্ৰা দুর্গ তাজমহল থেকে ২.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
লাল বেলেপাথরের তৈরি আগ্ৰা দুর্গ। নিৰ্মাণকাৰ্য ষোড়শ শতাব্দীতে আকবর এর রাজত্বকালে আরম্ভ হয় এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঔরঙ্গজেব এর রাজত্বকালে শেষ হয়। জাহাঙ্গীর এবং শাহজাহান এর রাজত্বকালে দুৰ্গের অনেক নতুন স্থাপনা নিৰ্মিত হয়েছিল।
দুৰ্গটির ভিতরে অনেক প্ৰাসাদ, মিনার এবং মসজিদ আছে। শীশ মহল, খাস মহল, মুহাম্মান বুৰ্জ, নাগিনা মসজিদ, দেওয়ান-ই-খাস, দেওয়ান-ই-আম, মোতি মসজিদ এই স্থাপনাসমূহ মুঘল শিল্পকলা'র এক আশ্চৰ্য নিদৰ্শন।
লাল ইটে মোড়ানো পথ বেয়ে লাল উঁচু প্রাচীরে ঘেরা আগ্রা ফোর্ট। আগ্রা ফোর্টের দেয়ালে দেয়ালে কারুকাজ। আসলে আগ্রা ফোর্ট ছিল একটি দূর্গ। এর ইতিহাস সেই ইব্রাহিম লোদী থেকে শুরু করে বাবর, হুমায়ূন, আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহজাহান, আওরঙ্গজেবের সাথে। দূর্গের মূল অবয়ব সম্রাট আকবর এর সৃষ্টি, তবে এর সর্বোচ্চ নান্দনিকতা পায় শাহজাহানের হাতে। সেনাদের দূর্গকে তিনি পরিণত করেন রাজপ্রাসাদে।
যমুনার তীরে নির্মিত দূর্গটির চারদিকে এমনভাবে দেয়াল তোলা হয়েছিলো যেন বোঝা না যায় কোনটা এর প্রবেশ পথ। দেয়ালের গঠন আর নকশার চাতুর্যই এর কারণ। রাজা মানসিং এর রাজপুত ফোর্টের নির্মাণ শৈলীর সাথে এর বেশ মিল। আগ্রা ফোর্টের আদলে তৈরি হয় দিল্লীর লাল দূর্গ। আকবর যখন শাসনভার নেন তখন তিনি পেয়েছিলেন এর ধ্বংসাবশেষ। ইতিহাসবিদ আবুল ফজল জানান এর নাম ছিল বাদলগর। এরপর রাজস্থান থেকে লাল বেলেপাথর এনে তিনি পুনর্নির্মাণ করেন দুর্গটি। সম্রাজ্ঞী যোধা বাই এর ভবনটি লাল, কারণ এর নির্মাতা আকবর। যোধা বাই এর মহল থেকে তাজমহল দেখা যায়। আগ্রা ফোর্টের নির্মাণ শৈলীতে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতির ছাপও রয়েছে। হাতি, পাখি, ড্রাগনের প্রতিমূর্তি স্থাপত্যে দেখা যায়।
শাহজাহানের প্রিয়, ভালবাসার ছিল সাদা মার্বেল। তাই দূর্গের ভেতরে ভবন নির্মাণে তিনি ব্যবহার করেছেন শ্বেতপাথর। অন্যান্য ভবনগুলোর নাম জাহাঙ্গীর-ই মহল, খাস মহল, দরবারই খাস, আর শীষ মহল। জাহাঙ্গীর-ই মহলে একটি পাঠাগার রয়েছে। আগ্রা ফোর্টের আকর্ষণের মূল হলো শিষ মহল। মার্বেলের চেয়েও দামী আয়না দিয়ে খচিত শিষ মহলের দেয়াল।
হাম্মাম অর্থাৎ রাজ গোসলখানা ছিলো অসাধারণ। পানি গরম করার জন্য ল্যাম্প ব্যবহার করা হত এখানে। আগ্রা ফোর্টের নিচে আছে ফাঁপা সুড়ঙ্গ, যার মধ্য দিয়ে যমুনার পানি বয়ে যেত। রানীরা থাকত নিচের দিকের ঘরগুলোতে, যাতে ঠান্ডা আবহাওয়া পেতে পারে সবসময়। দূর্গের ছাদে বসত গান নাচের আসর। সম্রাটের এবং শিল্পীর জন্য বাঁধানো মঞ্চ ছিলো। বিশাল এলাকা জুড়ে ছিলো দূর্গের বিস্তার।
আগ্রা ফোর্টেই বন্দী ছিলেন শাহজাহান, সন্তান আওরঙ্গজেব বন্দী করে রেখেছিলেন। নিজ প্রাসাদ থেকে তিনি দেখতে পেতেন যমুনার ওপারে তাজমহলকে। স্মৃতিচারণ করতেন প্রিয় সহধর্মিনী মমতাজকে।
আগ্রা ফোর্টের আরেকটি বিশেষত্ব হল, এটির মাঝে শুধু নারীদের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা মসজিদ আছে। এর নাম নাগিনা মসজিদ।
আজ এই বিংশশতাব্দীতে বাদশাহরা বা তার পরিবারের করো আনাগোনা নেই। তবে আগ্রা ফোর্টে সানন্দ্যে ঘুরে বেড়ায় কাঠবিড়ালী। খুবই বন্ধুবাৎসল এরা। হাতের কাছে চোলে আসে বাদাম খেতে!
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
0 notes
aimzworld007 · 4 years
Text
“বাদশাহ আলমগীর কুমারে তাহার পড়াইত এক মৌলবী দিল্লীর।”
Tumblr media
বাদশা আলমগীর বা সম্রাট আওরঙ্গজেব (নভেম্বর ৩,১৬১৮ – মার্চ ৩, ১৭০৭) ষষ্ঠ মোগল সম্রাট। দীর্ঘ ৫০ বছর তিনি রাজত্ব করেছিলেন। ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্যের শাসক ছিলেন। আওরঙ্গজেবের পুরো নাম ‘আসসুলতানুল আজম আবুল মুজাফফর মুহিউদ্দীন মুহম্মদ আওরঙ্গজেব বাহাদুর আলমগীর বাদশা গাজী’। ফারসিতে আলমগীর অর্থ জগতবিজেতা ৷
আওরঙ্গজেব (রহ) এ উপমহাদেশের অতীত ঐতিহ্যের হীরক খণ্ড। ১৫ কোটি মানুষকে…
View On WordPress
0 notes
Text
মুঘল সাম্রাজ্যের বংশ তালিকা বা সকল সম্রাটঃ
জহির উদ্দিন মুহম্মদ বাবর ( মুগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা) (১৫২৬-১৫৩০ খ্রি.)
সম্রাট হুমায়ুন (১৫৩০- ১৫৪০ খ্রি.)
সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৫ খ্রি.)
সম্রাট জাহাঙ্গীর (১৬০৫-১৬২৭ খ্রি.)
সম্রাট শাহজাহান (১৬২৮-১৬৫৮ খ্রি.)
সম্রাট আওরঙ্গজেব (১৬৫৮-১৭০৭ খ্রি.)
সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ (১৮৩৭-১৮৫৭ খ্রি.)
১. জহির উদ্দিন মুহম্মদ বাবর(১৫২৬-১৫৩০):
মুঘল সামাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহির উদ্দিন মুহম্মদ বাবর ১৪৮৩ সালে ২০ ফেব্রুয়ারি মধ্য এশিয়ার বর্তমান উজবেকিস্তানের ফরগনা রাজ্যে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা ওমর শেখ মির্জা ছিলেন ফরগনা রাজ্যের অধিপতি। পিতার মৃত্যুর পর মাত্র ১১ বছর বয়সে বাবর ফরগনা রাজ্যের সিংহাসন গ্রহণ করেন।
জহির উদ্দিন মুহম্মদ সাহসিকতা ও নির্ভীকতার জন্য ইতিহাসে ‘বাবর’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। তিনি পিতার দিক থেকে তৈমুর লঙ এবং মায়ের ‍ুদক থেকে চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন। ‘তুযক-ই-বাবুর’ বা বাবুরের আত্মজীবনী নামক গ্রন্থে বাবুর তাঁর জীবনের জয়পরাজয়ের ইতিহাস অতি সুন্দরভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন। বাবর খুব দৃঢ় স্পৃহা ছিল। তিনি তার প্রথম স্ত্রী সালতান বেগমের কাছে কিছুটা লাজুক প্রকৃতির ছিলেন যদিও পরে তার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। বাবর তার আত্মজীবনী গ্রন্থে কিশোর বয়সের কামনা বাবুরী নামক এক বালকের সম্পর্কে বেশ গুরুত্বের সাথে ব্যাখ্যা করেন।
মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা মাত্র ৪ বছরের শাসনের মাথায় ১৫৩০ মাত্র ৪৭ বছর বয়সে সম্রাট জহির উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন।
২. সম্রাট হুমায়ুন (১৫৩০- ১৫৪০ খ্রি.) :
মুঘল সম্রাট বাবুরের মৃত্যুর পর তার পুত্র হুমায়ুন মুঘল সমাজ্যের সিংহাসন গ্রহণ করেন। দেশ পরিচালনায় তিনি তাঁর বাবাকে সহায়তা করেছিলেন। ১৫২০ সালে, তিনি ১২ বছর বয়সে বাদশানের রাজ্যপাল নিযুক্ত হন। ১৫২৬ সালে বাবর যখন ভারত আক্রমণ করেছিলেন, হুমায়ূন তাঁর সাথে বাদশা থেকে একটি দল নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন। এই প্রচারণায় হুমায়ূন প্রথম বিজয় অর্জন করেছিলেন। তিনি কান্নাহার যুদ্ধে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন আফগান বিদ্রোহীর বিরুদ্ধ��� তাঁর বাবার শাসনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৫৩০ সালে তার পিতা বাবরের মৃত্যুর পরে, তিনি তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে নির্বাচিত হন। হুমায়ূন তার বাবার মৃত্যুর চার দিন পরে ২৩ বছর বয়সে ৩০ ডিসেম্বর, ১৩০-এ কাছাকাছি সময়ে সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন।
চৌসারের যুদ্ধে ১৫৩৯ সালে পরাজিত হয়ে হুমায়ুন কোনোভাবে প্রাণ নিয়ে দিল্লি পৌছেন। শেরশাহের ক্রমবর্ধমান শক্তির বিচার করতে না পেরে হুমায়ুন ১৫৪০ সালে কানৌজের যুদ্ধে পরাজিত হন। তিনি পলাতক হয়ে সিন্ধু হয়ে ইরানের দিকে পালিয়ে যান। পরর্তীতে পারস্যের সম্রাটের সহায়তায় হুমায়ুন ১৫৫৫ সালে পুনরায় দিল্লি দখল করেন। তিনি ১৫৫৬ সালে দিল্লির অদূরে তাঁরই নির্মিত দীন পানাহ দূর্গের পাঠাগারের সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
৩. সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৫ খ্রি.):
সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর সিংহাসন দখল করে করেন তার পুত্র আকবর মাত্র ১৩ বছর বয়সে ১৫৫৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি।
আকবর “দ্য গ্রেট” ছিলেন ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম সেরা শাসক। তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট। ভারতবর্ষে শাসনতান্ত্রিক অবস্থা স্থীতিশীল করার লক্ষ্যে তিনি আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা স্থাপন করেন। অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও তিনি মনোযোগ ছিলেন সম্রাট আকবর। তিনি মুঘলদের প্রধানতম প্রতিদন্ধী রাজপুতদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য এক রাজপুত নারীকে বিবাহ করেন। এর ফলে মুঘল সাম্রাজ্য এযাবৎ কালের সবচেয়ে বড় সীমানার অদিবাসী হয়। সম্রাট আকবরের শাসন আমলে GDP দিক থেকে মুঘল সাম্রাজ্য সমগ্র বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্থান নেয়। তিনি দ্বীন-ই-ইলাহি নামে নতুন এক ধর্মমত প্রতিষ্ঠা করেন। এই ধর্মের মাত্র ১৮ জন অনুসারিী।
সম্রাট আকবরের সময়ই মুঘল সাম্রাজ্য সবচেয়ে বিকশিত ছিল আর এজন্য তাকে শ্রেষ্ট মুঘল সম্রাট হিসেবে বিবেচসা করা হয়। ১৬০৫ সালে সম্রাট আকবর মৃত্যুবরন করেন।
৪. সম্রাট জাহাঙ্গীর (১৬০৫-১৬২৭ খ্রি.):
মুঘল সাম্রাজ্যের ৪র্থ সম্রাট জাহাঙ্গীর ১৬০৫ থেকে ১৬২৭ সাল পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্য শাসন করেন। মাদক ও নারীতে আসক্ত সম্রাট জাহাঙ্গীর শাসন আমলে মুঘল সাম্রাজ্যের ভীত কিছুটা দুর্বল হয়ে পরে তবে তার আমলেই সমগ্র বাংলা অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৬১০ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীর বাংলার রাজধানী বিহারের রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন।
তিনি সরকারি কাজে বাংলা ভাষার পাশাপাশি ফর্সি ভাষা প্রচলন করেন। সম্রাট জাহাঙ্গীর ১৬২৭ সালে মৃতুবরন করেন।
৫. সম্রাট শাহজাহান (১৬২৮-১৬৫৮ খ্রি.)
সম্রাট জাহাঙ্গীরের পুত্র শাহজাহান ১৬২৮ সালে মুঘল সাম্রাজ্যের ৫ম সম্রাট হিসেবে দিল্লীর সিংহাসন আরোহন করেন। সম্রাট শাহজাহান আমলকে মুঘল শাসন আমলের স্বর্নযুগ বলে অভিহিত করা হয়। শিল্প সংস্কৃতির বিকাশে সম্রাট শাহজাহানের পৃষ্টপোষকতার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে Prince fo Builder হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
মমতাজ ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী। সম্রট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে যমুনা নদীর তীরে দুর্লব পাথরের তৈরি সমাধি সেীধ তাজমহল নির্মান করেন। সম্রাট শাহজাহানের অমর সৃষ্টি হচ্ছে: কোহিনুর হীরা ও মণি মুক্তা খচিত ময়ু�� সিংহাসন। সম্রাট শাহজাহান দিল্লিতে লাল কেল্লা, জাম-ই-মসজিদ, দিওয়ান-ই-আম, ‍দিওয়ান-ই-খাস, আগ্রায় মতি মসজিদ এবং লাহোরে সালিমার উদ্যান নির্মাণ করেন।
সম্রাট শাহজাহানের ৪ পুত্রের মধ্যে অন্দরকোন্দলের বলি হিসেবে পুত্র আওরঙ্গজেব তাকে গৃহবন্দী করেন। ১৬৬৬ সালে সম্রাট শাহজাহান আগ্রা দুর্গে বন্দী থাকা অবস্থায় মৃত্যাবরন করেন।
৬. সম্রাট আওরঙ্গজেব (১৬৫৮-১৭০৭ খ্রি.):
সম্রাট আওরঙ্গজেব শাসনামলে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে আবর্ভুতহয়। প্রায় ৪৯ বছরের শাসনামলে অন্তত দৃঢ়তার সাথে মুঘল সামাজ্য পরিচালনা করেন। তার শাসন আমলে জিজিরা কর প্রতা চালু হয়। সহজ সরল জীবন-যপন ও ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী জীবন পরিচালনার জন্য তিনি জিন্দাপীর হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। ১৭০৭ সালে আওরঙ্গজেব মৃত্যুবরণ করেন।
৭. সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ (১৮৩৭-১৮৫৭ খ্রি.):
শেষ মুঘল সম্রাট ছিলেন বাহাদুর শাহ। সিপাহি বিদ্রোহের পর ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে রেঙ্গুনে (বর্তমান ইয়াঙ্গুনে) নির্বাসন দেওয়া হয়। ১৮৬২ সালে তিনি রেঙ্গুনে নির্বাসিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এবং রেঙ্গুনেই তাঁকে সমাহিত করা হয়।
মুঘল সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর (MCQ):
১. কোন যুদ্ধের মাধ্যমে ভারতের মুঘল সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছিল? উত্তরঃ পানিপথের প্রথম যুদ্ধ।
২. প্রথম পানি পথের যুদ্ধ কখন হয়? উত্তরঃ ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে।
৩. বাবর উপমহাদেশে মুগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা করেন? উত্তরঃ ১৫২৬ সালে।
৪. ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানি পথের প্রথম যুদ্ধে বাবর কাকে পরাজিত করেন? উত্তরঃ ইব্রাহিম লোদী।
৫. কোন যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদী বাবরের কাছে পরাজিত হয়? উত্তরঃ পানি পথের প্রথম যুদ্ধে।
৬. বাবর দিল্লির সিংহাসন অধিকার করেন কখন? উত্তরঃ ১৫২৬ সালে।
৭. ভারতের কোন যুদ্ধে প্রথম কামানের ব্যবহার হয়? উত্তরঃ পানিপথের প্রথম যুদ্ধে।
৮. পানিপথ অবস্থিত কোথায়? উত্তরঃ দিল্লির অদূরে।
৯. পানিপথের যুদ্ধ হয়েছিল কোন ��দীর তীরে? উত্তরঃ যমুনা।
১০ . পানি পথের দ্বিতীয় যুদ্ধ কোন সালে সংঘটিত হয়? উত্তরঃ ১৫৫৬ সালে।
১১. কোন যুদ্ধে আকবর দিল্লি জয় করেন? উত্তরঃ পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে।
১২. পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধ হয় কত সালে? উত্তরঃ ১৭৬১ সালে।
১৩. তৃতীয় পানি পথের যুদ্ধে কে কাকে পরাজিত করে? উত্তরঃ আহমদ শাহ আবদালি মারাঠাদিগকে।
১৪. মারাঠা শাসকের উপাধি ছিল? উত্তরঃ পেশোয়া।
15. ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কে? উত্তরঃ বাবর।
১৬. সম্রাট শাহজাহান মুগল বংশের কততম শাসক? উত্তরঃ পঞ্চম ।
১৭. মুঘল সম্রাট আকবরের পিতামহ কে ছিলেন? উত্তরঃ বাবর।
১৮. শাজাহানের কনিষ্ঠ পুত্র কে? উত্তরঃ মুরাদ।
১৯. শেষ মুঘল সম্রাটের নাম কি? উত্তরঃ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ।
২০. মুঘল সম্রাট বাবরের পুরো নাম কি? উত্তরঃ জহিরউদ্দীন মুহম্মদ বাবর।
২১. ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভারতের কোন প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ‍ছিল? উত্তরঃ উত্তর প্রদেশে।
২২. বাবরি মসজিদ ভারতবর্ষের কোন শহরে অবস্থিত ছিল? উত্তরঃ অযোধ্যা।
২৩. শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহের কবর কোথায়? উত্তরঃ ইয়াঙ্গুন।
২৪. দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে নির্বাসিত করা হয় কোথয়? উত্তরঃ রেঙ্গুনে।
২৫. কোন বিদেশি রাজা ভারতের কোহিনুর মনি ও ময়ুর সিংহাসন লুট করেন? উত্তরঃ নাদির শাহ।
২৬. নাদির শাহ ভারত আক্রমন করেছিলেন কোন সালে? উত্তরঃ ১৭৩৯ সালে।
২৭. আলমগীরনগর কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? উত্তরঃ কুচবিহার।
২৮. শাহজাহানের কন্যা জাহান আরা কোন ভ্রাতাকে সমর্থন করেছিলেন? উত্তরঃ দারা।
২৯. বাংলার মুসলিম শাসনামলে ‘আবওয়াব’ শব্দটি কোন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো? উত্তরঃ খাজনা।
৩০. ‘তাজমহ��’ কে প্রতিষ্ঠা করেছেন?
উত্তরঃ শাহজাহান।
৩১. ‘ময়ূর সিংহাসন’ এর নির্মাতা কে? উত্তরঃ শাহজাহান।
৩২. আগ্রার দুর্গের নির্মাতা কে? উত্তরঃ সম্রাট শাহজাহান।
৩৩. মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সমাধি কোথায়? উত্তরঃ লাহোরে।
৩৪. তাজমহল কোন শতাব্দীতে তৈরি হয়েছিল? উত্তরঃ সপ্তদশ।
৩৫. যে মহিলার সমাধির উপর তাজমহল নির্মিত? উত্তরঃ মমতাজ।
৩৬. ভারতের যে সম্রাটকে ‘আলমগীর’ বলা হতো? উত্তরঃ উওরঙ্গজেব।
৩৭. কখন বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা হয়? উত্তরঃ ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২।
৩৮. কোন মুঘল সম্রাট বাংলার নাম দেন ‘জান্নাতবাদ’? উত্তরঃ হুমায়ুন।
৩৯. কোন মুঘল সম্রাট তার শাসনকালে বাঙলায় প্রতিষ্ঠা লাভে ব্যর্থ হয়েছিল?
উত্তরঃ সম্রাট হুমায়ুন।
৪০. আকবর দিল্লির সিংহাসনে বসার সময় তার বয়স কত ছিল?
উত্তরঃ ১৩ বছর।
৪১. কোন মুঘল সম্রাট প্রথম বাংলা জয় করেন?
উত্তরঃ আকবর।
৪২. কোন মুঘল সম্রাটের সময় সাম্রাজ্যের সর্বাপেক্ষা বেশি বিস্তার ঘটে?
উত্তরঃ আকবর।
৪৩. বাংলায় মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ আকবর।
৪৪. কখন সম্রাট আকবর বাংলার শাসনভার গ্রহণ করেন? উত্তরঃ ১৫৭৬ সনে।
৪৫. ‘দীন-ই-ইলাহী’ ধর্ম প্রবর্তন করেন কে?
উত্তরঃ সম্রাট আকবর।
৪৬. কোন আমলে বাংলা গজল ও সুফি সাহিত্য সৃষ্টি হয়? উত্তরঃ মুঘল আমলে।
৪৭. টোডরমলের নাম কোন সংস্কারের সঙ্গে জড়িত?
উত্তরঃ রাজস্ব।
৪৮. টোডরমর কে?
উত্তরঃ আকবরের অর্থমন্ত্রী।
৪৯. ‘জিজিয়া’ কি ছিল?
উত্তরঃ অমুসলমানদের উপর ধার্য সামরিক কর।
৫০. সম্রাট আকবরের সমাধি কোথায়?
উত্তরঃ সেকান্দ্রা।
৫১. বাংলা সনের প্রবর্তক কে?
উত্তরঃ সম্রাট আকবর।
৫২. বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ চালু করেছিলেন কে? উত্তরঃ সম্রাট আকবর
0 notes
khulnabazar · 2 years
Text
ইতিহাসের এই দিনে
নিউজনাউ ডেস্ক: আজ ৮ জুন, ২০২২, বুধবার। নিউজনাউয়ের পাঠকদের জন্য ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যুসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো: ঘটনা: ১৬২৪ – পেরুতে ভূমিকম্প আঘাত হানে। ১৬৫৮ – পুত্র আওরঙ্গজেব বাবা মোগল সম্রাট শাহজাহানকে ৫ দিন অন্তরীণ রেখে আগ্রা দুর্গ দখল করেন। ১৭০০ – ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সুতানুটির বদলে ক্যালকাটা লেখা শুরু করে। ১৮৩০ – জার্মান…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
dailynobobarta · 4 years
Text
বকশীগঞ্জে ৯ মন্ত্রীকে কুটক্তির অভিযোগে যুবক গ্রেফতার
New Post has been published on https://is.gd/URummf
বকশীগঞ্জে ৯ মন্ত্রীকে কুটক্তির অভিযোগে যুবক গ্রেফতার
বকশীগঞ্জে সুমন সওদাগর (৩২) নামে এক বখাটে যুবককে গ্রেফতার করেছে পুুলিশ। বাংলাদেশকে আজব চিড়িয়াখানা ও সরকারের বর্তমান ৮জন মন্ত্রী এবং একজন সাবেক মন্ত্রীকে সেই চিড়িয়াখানার অদ্ভুত কিছু বন্যপ্রাণী বলে আখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় গতকাল শনিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ��সলাম বিজয় বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। আজ রোববার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলা সূত্রে জানাগেছে, বকশীগঞ্জ পৌর শহরের সওদাগর পাড়ার আওরঙ্গজেব সওদাগরের ছেলে সুমন সওদাগর শনিবার সকালে তার নিজ নামে ফেইসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেয়। স্ট্যাটাসে বাংলাদেশকে আজব চিড়িয়াখানা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.কে আবদুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো.শাহরিয়ার আলমসহ সরকারের দায়িত্বশীল ৯ জন ব্যাক্তিকে সেই চিড়িয়া খানার অদ্ভুত বন্যপ্রাণী বলে আখ্যায়িত করে। অন্যকোন দেশ এই প্রাণী গুলো ভবিষ্যতেও সংরক্ষন করতে পারবেনা তাই ফ্রিতে দেখার জন্য নিস্নে ছবিসহ প্রাণীদেরকে দেওয়া হইলো বলেও উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও তার ফেইসবুক আইডিতে গত ১৪ জানুয়ারি পৃথক একটি স্ট্যাটাসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়েও আপত্তিকর বিষয় পোস্ট করেন। ওই পোস্টে সেতুমন্ত্রীর একটি ভিডিও এডিটিং করে মানাহানিকর বিষয় উপস্থাপন করা হয়। এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। সুমন সওদাগরের শাস্তির দাবিতে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয় স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। শনিবার রাতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয় বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরেই বখাটে সুমন সওদাগরকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয় বলেন, বাংলাদেশ আজব চিড়িয়াখানা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৯ জন মন্ত্রীকে বন্যপ্রাণী আখ্যা দিয়ে ফেইসবুকে কুটুক্তি এটা অত্যান্ত আপত্তিকর, মানহানিকর যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না। এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম সম্রাট বলেন,তার বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। রোববার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
0 notes
sentoornetwork · 5 years
Text
মসলিনের তার সৌন্দর্য ও সূক্ষ্মতায় হৃদয় জয় করেছিল
New Post has been published on https://sentoornetwork.com/story-of-muslin/
মসলিনের তার সৌন্দর্য ও সূক্ষ্মতায় হৃদয় জয় করেছিল
কমলেন্দু সরকার
দুর্গাপুজোর কয়েকদিন আগে দক্ষিণাপণের এক দোকানে দেখি বিশাল ভিড়। লম্বা লাইন। নাক গলাতেই ব্যাপারটা জানা সস্তায় মসলিন বিক্রি হচ্ছে। মসলিনকে নতুন করে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। স্মৃতির অতলে চলে যাওয়া মসলিনকে ফিরিয়ে আনা নতুন কোনও কথা নয়। আশির দশকে অম্বিকা-কালনায় এক ভদ্রলোক নতুন করে মসলিনের পুনর্জীবন দিয়েছিলেন। তাঁর নামটি এই মুহূর্তে স্মরণে নেই। তবে এ-ব্যাপারে তাঁকে খুবই সাহায্য করেছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। মসলিনের পুনর্জীবন দেওয়া সেই ভদ্রলোক বিভিন্ন ধরনের মসলিন দেখিয়েছিলেন। অত্যন্ত মূল্যবান মসলিন দেখাতেই বাংলাদেশের জনপ্রিয় যাত্রাপালা ‘সোনাই বিবির পালা’-র একটি গান মনে পড়েছিল–‘পরথমে পাইড়াইল শাড়ি ভাইরে/শাড়ি নামে গঙ্গার জল/নুখেতে নইলে শাড়ি/আরও করে টলমল রে!/পানিতে থইলে গো শাড়ি/শাড়ি পানিতে মিলায়/শুখেনায় থইলে শাড়ি ভাইরে/পিঁপড়ায় টাইন্যা লইয়া যায় রে।’ অর্থাৎ মসলিনটি এতটাই হালকা যে কয়েকটি পিঁপড়ে টেনে চলেছে বারো হাত একটা শাড়ি! ভাবা যায়! দামি মসলিন ছিল এমনই। কিংবদন্তি রয়েছে, একদিন সাত প্যাঁচ দিয়ে আবরোঁয়া মসলিন পরে আওরঙ্গজেব-দিলরস বানু বেগমের বড় সন্তান কন্যা জেবউন্নিসা এসেছিলেন পিতার কাছে। উলঙ্গ ভ্রমে আওরঙ্গজেব এক ধমক দেন কন্যা জেবউন্নিসাকে। শোনা যায়, রোমান নারীরা শরীরী বিভঙ্গ এবং বিভাজিকা দেখানোর জন্য মসলিন পরতে পছন্দ করতেন সেকালে। সেকালের এসব কথা মসলিনের সূক্ষ্ম বুননশৈলী ও মিহি কাপড়ের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়। ঢাকার ঐতিহ্য বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল মসলিনের কারণে। মিহি সুতোয় বোনা সূক্ষ্ম এ-কাপড়টি সেসময় দুনিয়াজোড়া খ্যাতি লাভ করেছিল এবং ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হয়েছি সেসময়।শুধু রাজা, বাদশা, নবাব নয়, বিত্তশালীরাও তখন হুমড়ি খেয়ে পড়তেন মসলিনের জন্য। মসলিন তার সূক্ষ্মতা ও রমণীয় সৌন্দর্যের কারণেই জয় করে নিয়েছিল সম্রাট-সম্রাজ্ঞী থেকে সাধারণ মানুষের হৃদয়। সাধারণ ক্রয়ক্ষমতার মতোও সস্তার মসলিনও বানাতেন কারিগরেরা। মাত্র আড়াইশো কাউন্টের থেকেও মিহি সাদা সুতো দিয়ে মসলিন তৈরি হত শত শত বছর আগে। রাজ পরিবার-সহ ধনী পরিবারের মহিলাদের পছন্দের একনম্বরে থাকা এই শাড়ি বোনা হত কাপাস তুলো থেকে তৈরি সুতোয়। সেকালে চারু ও কারু শিল্পীরা আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে যেসব বস্ত্রশিল্প সৃষ্টি করতেন তার মধ্যে মসলিনের বস্ত্র ছিল অন্যতম। শিল্পীরা মসলিনের ওপর শিল্পকর্ম করতে পছন্দও করতেন। মসলিনের শাড়ি কিংবা অন্যান্য পোশাক তৈরির জন্য প্রয়োজন হত একধরনের বিশেষ এক সূক্ষ্ম সুতো, যা অন্য কোথাও থেকে আমদানি হত না। বাংলাদেশের মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীর ধারে বয়রাতি ও ফুটি কাপাস তুলোর আবাদ করা হত। ফুটি হত ব্রহ্মপুত্রের ধারেও। সেই কাপাসের তুলো দিয়ে ১৬ থেকে ২০ বছরের কিশোরী মেয়েরা তাদের নরম আঙুল দিয়ে মিহি সুতো তৈরি করত। তবে ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী ফুটি কাপাসের তুলা থেকে তৈরি সুতোয় হত উন্নত মানের মসলিন। ওই সুতো তৈরি করা হত নদীর ওপর নৌকায় বসে, আদর্শ আর্দ্র পরিবেশে। এরপর নানা পর্যায় ছিল মসলিন তৈরির। প্রতিটি পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন লোকেরা কাজগুলো সম্পন্ন করতেন। তাই মসলিন তৈরি ও বাজারজাত করা ছিল এক ধরনের পেশা। যার প্রতিটি স্তরে ছিল দক্ষতার প্রকাশ। সেকালে মসলিনের কাজে নিয়োজিত ছিলেন হাজার হাজার শিল্পী এবং কারিগর। বিশেষজ্ঞদের মতে, মসলিন তৈরির পুরনো জায়গা ছিল ভাওয়ালের কাপাসিয়া। মধ্যযুগে ঢাকাই মসলিনের প্রধান কেন্দ্রে ছিল সোনারগাঁ।এছাড়াও ছিল ঢাকা, ডেমরা, বালিয়াপাড়া, নাপাড়া, মৈকুলি, বাছারক, চরপাড়া, বাঁশটেকি, নবীগঞ্জ, শাহপুর ইত্যাদি জায়গা। জানা যায়, পনেরো রকম মসলিনের নাম পাওয়া যায়। সেই তালিকায় আছে– মলবুস খাস যা মোগল সম্রাটের পরিবারের লোকজন ব্যবহার করতেন। বাংলার নবাব-সুবাদারদের জন্য ছিল সরকার-ই-আলা। আব-ই-রওয়ান নদীর জলের সঙ্গে মিশে যেত। জমিদার ও বিত্তশালী পরিবারের মেয়েরা ব্যবহার করতেন ঝুনা। বাঈজিরাও নাকি ঝুনায় তৈরি পোশাক ব্যবহার করতেন। শবনব নামের মসলিন এতটাই সূক্ষ্ম ছিল যে, ভোরের শিশির ভেজা ঘাসে মেলে দিলে শিশির আর মসলিনের পার্থক্য করা যেত না। রুমাল হত নয়নসুখ বা তনসুখ মসলিনের। ইউরোপীয় মহিলারা রুমাল ও স্কার্ফ হিসেবে ব্যবহার করতেন সরবন্দ। উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা পাগড়ি পরতেন সরবন্দ মসলিনের। যেসব মসলিনে তাঁতেই নকশা করা হত সেগুলোকে বলা হত জামদানি। সূক্ষ্ম বুননের বদন-খাস-এ হত সাধারণ জামা। এছাড়াও ছিল চারকোনা, আলাবালি, তনজেব, তরন্দাম, ডুরিয়া, চারকোনা ইত্যাদি মসলিন। জানা যায়, মসলিন এতটাই সূক্ষ্ম ছিল যে চল্লিশ হাত লম্বা দু’হাত চওড়া একটি শাড়ি আংটির ভিতর দিয়ে গলে যেত। নয়ের শতকে এসে এক বিদেশি পর্যটক তা দেখে লিপিবদ্ধ করেন। চোদ্দো শতকে পর্যটক ইবনে বতুতা তিনি সোনারগাঁয়ের মসলিন মন্তব্য বলেন, এমন উৎকৃষ্ট মানের পোশাকআসাক সারা দুনিয়ায় আর কোথাও হয়তো পাওয়া যায় না! এক প্রথিতযশা ইংরেজ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, এসব কোনও পরি কিংবা কীটপতঙ্গের বোনা! মানুষের পক্ষে এমন বয়ন করা সম্ভব নয়! মানুষ এমন কাজ করতে পারে না! মসলিন নিয়ে কিংবদন্তি কিংবা কাহিনির শেষ নেই। শোনা যায়, মসলিন যাঁরা করতেন সেইসব তাঁতিদের আঙুল কেটে দিয়েছিল। আসলে নাকি সেইসব তাঁতিদের এত টাকাপয়সা দিয়ে কাজ করাতেন সম্রাট-সম্রাজ্ঞীরা, রাজা-মহারাজারা ফলে কারিগরেরা কাজ করার ইচ্ছেটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাঁদের কাজ ছাড়া করতেন মসলিন শিল্পীরা। মসলিন বাংলার ঐতিহ্য। বহুকাল ধরে সারা দুনিয়ায় এর জনপ্রিয়তা থাকলেও মুঘল সম্রাট আর রাজা-মহারাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় মসলিন শিল্প তার আপন মহিমায় ঐশ্বর্যময়। ১৭৫৭- পলাশি যুদ্ধের পর মসলিন তার গরিমা হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। হারিয়েও যায় একসময়।
0 notes
চোখ জুড়ানো বিশ্বের ৫টি মসজিদ
চোখ জুড়ানো বিশ্বের ৫টি মসজিদ
ধর্ম ডেস্ক : ইসলামিক স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন মসজিদ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই রয়েছে নয়নাভিরাম অনেক মসজিদ। সেগুলো থেকে ৫টি মসজিদের সংখিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো-
বাদশাহি মসজিদ, পাকিস্তান মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব এই মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৬৭১-১৬৭৩ সালের মধ্যে পাকিস্তানের লাহোরে এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়। ওই সময় এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। সামনের সুবিশাল চত্বরসহ মসজিদের আয়তন প্রায় দুই লাখ ৭৬ হাজার স্কয়ার…
View On WordPress
0 notes
a-somnambulist-blog · 5 years
Text
আলিনগরের আরশিকথা
এই কাহিনী দুটি বাঙালি চরিত্রের কাল্পনিক আলোচনামাত্র। আর সেই আড্ডার প্রেক্ষাপটে রয়েছে 'দুটি আপাত বাঙালি শহর' এবং 'দুটি কেল্লা'। চরিত্রদুটির এই আলোচনায় আপনি হয়ত খুঁজে পেতে পারেন নিজেকে... অথবা ইতিহাসের সেই আলিনগরকে যাকে হয়ত 'খুঁজে' দেখা হয়নি।
Tumblr media
'আলিনগরের কেল্লা দেখেননি নিশ্চয়ই?'
'না মশাই...। আলিনগর তো যাইনি কোনও দিন ! আলিনগর কোন স্টেটে...... মধ্যপ্রদেশ কি?'
'আচ্ছা বাদ দিন......। কলকাতার কেল্লা দেখেছেন ?'
'কেল্লা? কলকাতায়? ওহ... ফোর্ট উইলিয়ামের কথা বলছেন কি?'
'আজ্ঞে। ফোর্ট উইলিয়ামের কথাই বলছি। আচ্ছা বলুন তো...  ফোর্ট উইলিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা কে?'
কেন...... লর্ড ক্লাইভ।
'ফোর্ট উইলিয়াম' কোথায় জানেন?
'ইয়ার্কি করছেন? কেন...... ওই তো ময়দানের পাশে।'
'নাহ......। বিস্তর গণ্ডগোল। আচ্ছা সহজ প্রশ্নে আসি --- কলিকাতার গোড়াপত্তন কে করেন?'
কেন...... জোব চার্নক। সত্যজিৎ বাবু বলে গেছেন যে সাহেবের নাম জোব চার্নক...... জব চার্নক নয়। ফেলুদা পড়েননি?'
'আচ্ছা... সালটা মনে আছে?'
'কেন থাকবে না? ১৬৯০। ইতিহাসে আমার লেটার ছিল বুঝলেন। সেই প্রথম বাংলার মাটিতে ইংরেজদের পদার্পণ। তারপর দুশো বছর......।'
'অ্যাঁ... তার মানে আপনি বলতে চাইছেন যে চার্নক সাহেবের আগে ইংরেজরা বাংলায় আসেনি।'  
'এটা আবার কোনও প্রশ্ন হল!  আপনি তো মশাই জ্বালিয়ে মারলেন। চার্নক সাহেব ১৬৯০ সালের ২৪শে আগস্ট গোবিন্দপুর, সুতানুটি আর কলিকাতা... এই তিনটি গ্রাম নিয়ে কলিকাতার গোড়াপত্তন করেন......। শুনুন...... ১৯৯০ সালে আমার মাধ্যমিক। ওই বছর 'কলিকাতার ৩০০ বছর' রচনাটি দারুণ তৈরি করেছিলাম।'
'দাঁড়ান মশাই...। কোথাও একটা ভুল......'
'কোনও ভুল নেই......। আচ্ছা আপনি সাবর্ণ রায়চৌধুরিদের নাম শোনেন নি?  ওই যে যাদের বাড়ির দুর্গাপুজো হেব্বি ফেমাস। বেহালা বড়িশার দিকে বাড়ি......মানে আমাগো দাদার বাড়ির কাছে...... বুঝলেন। গেলবার পুজোয় আমার অফিসের কয়েকজন ঘুরে এসেছে 'পুজো পরিক্রমার' বাসে চেপে। এইবার পুজোতে ভাবছি আমিও একবার......। তাদের কাছ থেকেই তো ওই তিনটি গ্রাম কিনে......'
'আমায় মাপ করবেন। কিন্তু আপনার তথ্যে কতকগুলো দস্তুরমত ভুল আছে ----
১। কলকাতার কেল্লা মানে ফোর্ট উইলিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা স্যার জন গোল্ডসবোরো আর সেই ফোর্ট উইলিয়াম ময়দানে নয়... ডালহৌসিতে তে ছিল... মানে এখন যেখানে জি পি ও।
২। চার্নকবাবু গত হন ১৬৯৩ তে আর তার পাঁচ বছর বাদে মানে ১৬৯৮ এ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বেহালার সাবর্ণ রায়চৌধুরিদের কাছ থেকে গোবিন্দপুর, সুতানুটি আর কালিকাতা, এই তিনটি গ্রামের দখলদারি (lease) নেন বার্ষিক ১৩০০ টাকার বিনিময়ে।
৩। আর জোব চার্নক কলকাতার গোড়াপত্তনকারী নন বা ২৪শে আগস্ট কলকাতার জন্মদিন নয়। একথা আমি নয়...... কলকাতা হাইকোর্ট বলছে। রায় বেরিয়েছিল ২০০৩ সালে।
'অ্যাঁ...... বলেন কি মশাই। কিন্তু......'
'হ্যাঁ... এই কিন্তুটাই হল গিয়ে আসল কথা। এই রকম অনেক কিন্তু-ই আছে যা আমাদের জ্ঞ্যান পরিধির অন্তরালেই থেকে যায়। কিছু জানা যায়...... কিছু জানা যায় না। আচ্ছা ভেবে দেখেছেন কোনদিন কি যে...... চার্নকবাবু জাহাজে করে বেড়াতে বেড়াতে হঠাৎ করে 'এই যে কলকাতা' বলে কিছু পেয়েছিলেন? নাকি অন্যকিছু? আর যদি পেয়েও থাকেন তাহলে সেই জলা-জঙ্গলে ভরা ম্যালেরিয়া প্রবণ জায়গায় কি মরতে ঘাঁটি গেঁড়ে বসলেন?'
'এটা ভাবব?'
'অবশ্যই ভাববেন। আচ্ছা...... বলুন তো জোব চার্নক কে ছিলেন? মানে ভাস্কো-ডা-গামার মতো কেউ কি...... যিনি ঘুরে ঘুরে দেশ আবিষ্কার করতেন?'
'জানি না মশাই। আপনিই বলুন। আমার যেন কেমন সব ঘেঁটে গেল...।'
'ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিল ব্রিটিশ গভরমেন্ট এর এক প্রাইভেট কোম্পানি...... যার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সাথে ব্যাবসা করার জন্যে। সেই কারণে তাদের ভারতে পাড়ি। প্রধান উদ্দেশ্য -- রেশম আর মশলার ব্যবসা। সালটা তখন ১৬০৮। ওই একই উদ্দেশ্যে ফরাসী (French) ও ওলন্দাজ (Dutch) কোম্পানির দলও তখন পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বাংলা, উড়িষ্যা ও বিহারে নতুন কারখানা খোলার জন্যে দিল্লির মসনদে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের কাছে ফরমায়েশ করে বসে আছে। স্বভাবতই বাংলা তখন মুঘল দের প্রেরিত গভর্নরদের শাসনে। জোব চার্নক ছিলেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন বিশ্বস্ত কর্মচারী, যাকে এজেন্ট হিসেবে কোম্পানি হুগলী কাশিমবাজারে পাঠিয়েছিল, মূলত পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গে (একত্রে বাংলা) ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার জন্যে। মাসিক বেতন ওই দেড়-দু পাউন্ড।'  
'এজেন্ট?...... ও বাবা! আমি তো জোব সাহেব কে কলকাতার 'ফাদার ফিগার' টাইপ ভাবতাম। আর আপনি তাকে এজেন্ট বলছেন? মানে আমাদের অফিস যে রকম আমাদের অফিসিয়াল টুরে পাঠায় সেরকম?'
'কতকটা সেরকমই। তবে তার জন্যে তার বেতন বা ডি এ কি রকম বেড়েছিল, ইতিহাসে তার কোনও উল্লেখ নেই।'
'অগত্যা...।'
'যাই হোক...... ��িরি ১৬৪২ এ......। শুনলে খুশি হবেন হয়ত...... যে আর পাঁচটা কোম্পানির মতো প্রথম দিকে (মানে ১৬৬০ অবধি) কোম্পানির ব্যাবসা রীতিমতো ধুঁকছিল। অবশেষে ১৬৬০ এর পর মানে দিল্লির মসনদে অউরঙ্গজেবের অভিষেকের পর আর চার্নক সাহেবের তৎপরতায় কোম্পানির ব্যাবসা ফুলে ফেঁপে ওঠে।'
'তারপরেই তো ১৬৯০...... মানে হুগলী থেকে কলকাতা? তাই তো?'
'না স্যার...। ব্যাপারটা অত সহজে হয়নি।'
'থ্রিলিং কিছু?'
'তবে যা ঘটেছিল...... তা আমার আপনার খুব চেনা। বুঝতেই পারছেন......বিদেশি কোম্পানি...হেব্বি ব্যাবসা শুরু করছে......সরকারী আমলারা (পড়ুন মুঘল অফিসিয়ালস) পিছিয়ে থাকে কেন। নতুন নতুন সরকারী ট্যাক্সের বোঝা (জিজিয়া কর), শায়েস্তা খানেদের মতো প্রভাবশালী গভর্নরদের বিভিন্ন প্রকার দাবি দাওয়া, ঘুষ আদায় এবং উপরন্তু তখন ফরাসী এবং ওলন্দাজদের কোম্পানির সাথে ব্যাবসায়িক প্রতিযোগিতা ---সব মিলিয়ে পরবর্তী কয়েক বছরে কোম্পানির ব্যাবসা প্রায় লাটে ওঠার জোগাড়। শেষ মরণকামড় দিতে কোম্পানি মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। সালটা তখন ১৬৮৬। ইংল্যান্ড থেকে জাহাজ পথে সৈন্য পাঠানো হয় আর আপনার জোব চার্নক ছিলেন ব্রিটিশ বাহিনীর কম্যান্ডার। ইতিহাসে এই যুদ্ধকে চাইল্ড ওয়ার বলা হয়।'    
'শায়েস্তা খান.?..... কস্মিনকালে এরকম নাম শুনেছি বলে তো মনে করতে পারছি না।'  
'অউরঙ্গজেবের বিশ্বস্ত অনুচর। শিবাজি থেকে গোলকোন্ডা...... ভারতবর্ষের ইতিহাসের বহু যুদ্ধের কাণ্ডারি এই শায়েস্তা খান।'
'ছাড়ুন মশাই শায়েস্তা খানকে। ......... নাম শুনেই পিলে চমকে যায়। তবে আপনার ব্যপারটা আন্দাজ করতে পারছি...। মানে আপনার ওই 'শিশু যুদ্ধে' শায়েস্তা খানকে শায়েস্তা করেই........ চার্নক সাহেব...... কলকাতা...'
'আজ্ঞে না... হয়েছিল ঠিক উল্টোটাই। শায়েস্তা খানের তাড়ায় চার্নক ও তার দলবল হুগলী থেকে আশ্রয় নেন সুতানুটিতে। তারপর সেখান থেকে তাড়া খেয়ে দলবল সমেত মেদিনীপুরের হিজলি দ্বীপে। তিন মাসের মধ্যে চার্নক সাহেবের বেশীর ভাগ সৈন্য ওই খানে পানীয় জলের সঙ্কটে ও ম্যালেরিয়ায় মারা যায়। অবশ্য শেষমেশ মুঘলদের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাবসায়িক চুক্তি শেষে কোম্পানি বাংলায় নিজেদের ব্যাবসার পাঠ প্রায় তুলে দেয়...আর চার্নক সাহেবকে মাড্রাস পাঠিয়ে দেওয়া হয় ১৬৮৯ সালে।'
'মানে চার্নক সাহেব মাড্রাসেও গেছিলেন। আমি তো ভাবতুম যে উনি কলকাতার বাইরে কোনও দিন...।'
'হ্যাঁ স্যার গেছিলেন.... মাড্রাসও যে তখন কোম্পানির আর এক ঘাঁটি। তবে এক বছরের মধ্যে ফিরেও আসেন। ১৬৯০ এ বিশেষত অউরঙ্গজেবের তৎপরতায় কোনও এক রাজনৈতিক কারণে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর হয় কোম্পানি ও মুঘলদের মধ্যে। কোম্পানিকে নিজেদের মতো ব্যাবসা করার অনুমতিও দেওয়া হয় বাংলায় বার্ষিক ৩০০০ টাকা ট্যাক্সের বিনিময়ে। জোব চার্নক ২৪শে আগস্ট ১৬৯০, মাড্রাস থেকে ফিরে আসেন বাংলায়, নামেন সুতানুটিতে, শুরু করেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বিতীয় ইনিংস ইন বেঙ্গল। এখনও কিন্তু কলকাতা আসেনি.........।'
'হুম'।
'অবিশ্যি ১৬৯৩ এ জোব চার্নক মারা যান আর কলকাতা বা বলা ভালো কালিকাতা ফ্রেমে আসে আরও পাঁচ বছর বাদে, মানে ১৬৯৮। ওই সেই জমিদার সাবর্ণ রায়চৌধুরিদের থেকে কোম্পানির তিনটি গ্রামের lease এবং এই তিনটি গ্রামকেই কেন্দ্র করে ব্যবসা বৃদ্ধি। মুঘলদের সাথে একই প্রকার চুক্তি করে ফরাসীরা তখন ঘাঁটি থুড়ি বিজনেস হাব গেড়েছে চন্দননগরে আর ওলন্দাজরা চুঁচুড়ায় --- জলপথ সম্বলিত সবই গঙ্গার ধারে।'  
'একটি প্রশ্ন করতে পারি?
'করুন।'
'বলছি...... একটি প্রাইভেট ব্যাবসায়িক কোম্পানি কেল্লা বানাতে গেল কোন দুঃখে? যুদ্ধ করে দখলদারি নেবে বলে?'
'এই তো দিব্বি মাথা খুলেছে আপনার। বেড়ে প্রশ্নটি করলেন তো........! আপনি ভাবছেন...... বিদেশি ক���ম্পানি...... এই ধরুন পেপসি বা কোকাকোলার মতো... এসে বেশ করে অ্যাড-ট্যাড দিয়ে রমরমিয়ে ব্যাবসা করবে...... নাকি কেল্লা বানাবে?'  
'হ্যাঁ...... মানে...... ঠিকই ধরেছেন।'
'তাহলে জেনে রাখুন... কোম্পানি এখানে প্রথমে ব্যবসা করতেই এসেছিল......দখলদারি করতে নয়। কিন্তু মুস্কিল সাধলেন চন্দ্রকোনা সাব ডিভিশনের পাঞ্জাবী জমিদার শোভা সিং। বিদেশি কোম্পানিদের অবাধে ব্যাবসা করার মুঘল অনুমতি তিনি মেনে নেননি। এককথায় বলতে পারেন তিনি ওই বিদেশী কোম্পানি এবং মুঘল --- দুইয়ের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেন'।
'বলেন কি মশাই। এ যে আমার - আপনার খুব চেনা গল্প......। এই তো কিছু বছর আগে আমাদের পশ্চিমবঙ্গেই......।'
'একদমই তাই। History repeats by itself। সালটা তখন ১৬৯৫...... আওরঙ্গজেব তখন মারাঠাদের সাথে যুদ্ধে নাজেহাল। আর সেই সুযোগে আফগানদের সাথে হাত মিলিয়ে বাংলায় শুরু হয় শোভা সিং এর বিদ্রোহ। উনি দখল করেন তৎকালীন বর্ধমান এবং ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করেন ওই ব্রিটিশ, ফরাসী বা ওলন্দাজ কোম্পানিগুলির ওপর। পরবর্তীকালে শোভা সিং মারা গেলেও আফগানদের নেতৃত্বে বিদ্রোহ অন্য মাত্রা পায়।'    
'আরিব্বাস! এ যে বাংলায় প্রথম বিপ্লব!'
'কতকটা সে রকমই। বলতে পারেন এই প্রেক্ষাপটেই  ব্রিটিশ, ফরাসী বা ওলন্দাজ কোম্পানিগুলি নিজেদের রক্ষার্থে কেল্লা তৈরি করতে শুরু করে যথাক্রমে কলকাতায়, চন্দননগরে আর চুঁচুড়ায়। স্যার জন গোল্ডসবোরো আর চার্লস আয়াবের নেতৃত্বে কলকাতায় কেল্লার কাজ শুরু হয় আপনার ডালহৌসি পাড়ায়। এখনকার ডালহৌসি চত্বর মানে ওই জি পি ও, কয়লাঘাট স্ট্রিট থেকে ফেয়ারলি প্লেস...... মানে লালদিঘির উল্টো দিকে স্ট্রান্ড রোড অবধি এই কেল্লা ছিল। কেল্লার প্রধান গেট ছিল স্ট্রান্ড রোডের দিকে।'
'বলেন কি মশাই...। ওইখানে কেল্লা...? গেলবার গরমের ছুটিতে তো ওই ফেয়ারলি প্লেস থেকে ট্রেনের টিকিট কাটলুম আর জি পি ও তে তো এককালে হামেশাই যেতুম। ওই খানে কেল্লা ছিল? মানে সোনার কেল্লা টাইপের...। উফ...ভাবা যাচ্ছে না মশাই।'
'একটু ভুল হল। কেল্লা বলতে আমি আপনি যা বুঝি ফোর্ট উইলিয়াম কিন্তু সেরকমটি ছিল না।'
'মানে?'
'দেখুন অক্সফোর্ড ডিকশনারি ঘাঁটলে আপনি 'কেল্লা' ওরফে 'Fort' শব্দের আর একটি অর্থ পাবেন -- 'The Trading Station'।  ফোর্ট উইলিয়াম কতকটা এই ধরনের কেল্লা......। মানে নিরাপদ আশ্রয়ে গঙ্গাপথে ব্যাবসা বাণিজ্য করার বিজনেস হাব'।
'মানে আমাদের সেক্টর ফাইভের মতো...?'
'এইরে...না না... তা নয়। কেল্লার ভেতরে গভর্নর হাউস, থাকার জন্যে দোতলা বাড়ি, দপ্তরী বা কেরানিদের থাকার জন্যে রাইটার্স বিল্ডিং, গুদামঘর, অস্ত্রাগার সবই ছিল। প্রায় পাঁচ বছর ধরে কেল্লার কাজ চলার পর শেষ হয় আপাত ১৭০৬ সালে কিন্তু তারপরেও বেশ কয়েক বছর চলে এই কেল্লা নির্মাণ।'
'বেশ বুঝলাম। ওই জি পি ও টাই আগে কেল্লা ছিল?'
'না না... । এখনকার জি পি ও ভবনটি তৈরি হয় ১৮৬৪ সালে মানে দেড়শ বছর পরে। তবে এটা ধরে নেবেন না যেন যে কেল্লা তৈরি হওয়ার পরেই 'নগর কলকাতা' তৈরি করতে শুরু করে ব্রিটিশরা। তখন 'নগর কলকাতা' বলতে ধান ক্ষেত, তামাক চাষ, কলা গাছ, বাগান, খাল, পাতকুয়া, পুকুর এইসব। পরিবহন বলতে গরুর গাড়ি বা পালকি। কাঁচা এবড়ো খেবড়ো পথ আর রাস্তা বা স্ট্রিট বলতে খান তিনেক। আর ওই কেল্লাটি!'
'কিন্তু তাহলে সেই কেল্লাটি গেলো কোথায়? এক্কেবারে ভ্যানিশ?'      
'শুনবেন নাকি গল্পটা? বেশ...... একটা সহজ ব্যাপার বুঝে নিন আগে...... ওই সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিক থেকে বাংলার রাজনৈতিক অবস্থান মূলত একটি ত্রিভুজের মতো.........যার শীর্ষ বিন্দুতে দিল্লির মুঘল সাম্রাজ্য মানে Central Govt, আর একটি বিন্দুতে কলকাতায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আর তৃতীয়টিতে মুর্শিদাবাদে মুঘল অধিনস্ত বাংলার নবাবরা মানে State Govt. এই নবাবদের লিস্ট পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের কল্যাণে আমার আপনার খুব চেনা -- মুর্শিদ কুলি খান, সুজা-উদ-দিন, সরফরাজ খান, আলীবর্দি খান এবং তারপর সিরাজ-উদ-দৌল্লা। প্রায় ষাট- সত্তর বছরের ইতিহাস পেরিয়ে এলাম কিন্তু। তখন বাংলার প্রধানতম নগর - মুর্শিদাবাদ, নবাবদের রাজধানী।'
'ওহ... মুর্শিদাবাদ বলতে মনে পড়ল 'ছানাবড়ার' কথা......। উফফ...কতদিন যে খাইনি।'
'ছানাবড়া মনেহয় ওই সমসাময়িক নবাবদের মিষ্টি। এক মণ, দেড় মণের ছানাবড়ার কথাও শোনা যায়। তবে তৎকালীন সময়ে চক্ষু ছানাবড়া করার মতো ঘটনাটি ছিল আউরঙ্গজেবের মৃত্যুর বছর দশেকের মধ্যেই মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের সূত্রপাত। মানে ঐ দুর্বল কাপ্টেন্সি, দুর্বল রিজার্ভ বেঞ্চ......আর ফলস্বরূপ ঘোড়ি, গজনী আর নাদির শাহদের 'কাউন্টার অ্যাটাকে' পরপর 'গোল'। তারপর ১৮৫৭ অবধি কোনওমতে নিজেদের মধ্যে 'পাস খেলে' টিকে থাকলেও...... মুঘল সাম্রাজ্যের পতন সূত্রপাত ওই ১৭২০-৩০ এর পর থেকেই।'    
'মানে ত্রিভুজের শীর্ষবিন্দুর পতন?'  
'একদম ই তাই......। এবং তার ফলে ত্রিভুজের বাকি দুই বিন্দুর মধ্যে শুরু হয় পেশী শক্তির আস্ফালন, ক্ষমতার লোভ, শাসনের লোভ এবং সর্বোপরি 'আমিত্ব' বোধ। আর এইখানেই ঘুরতে শুরু করে ইতিহাসের চাকা। নিজেদের কূটনীতিক বুদ্ধির জোরে তাদের একসময়ের 'বস'......... মানে ঐ ব্যাকফুটে যাওয়া মুঘলদের একপ্রকার 'হাতিয়ার' করেই কোম্পানির 'ব্যবসাদার' থেকে 'শাসকে' রূপান্তরিত হওয়ার সূত্রপাত। আর তাতে অক্সিজেনের কাজ করেছিল ভারত তথা বাংলার বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যেকার কোন্দল আর ক্ষমতার লালসা।'
'ছক যে মিলে যাচ্ছে মশাই...। এই থিওরিই তো এখনও......।'
'সে আর বলতে। একদিকে সিরাজের গোটা বাংলায় ক্ষমতাসীন হওয়ার নাছোড় মনোবৃত্তি আর অন্যদিকে কোম্পানির ব্যাবসায়িক ও কূটনৈতিক হাতিয়ার ---- সবমিলিয়ে ১৭৫৬ সালে সিরাজের প্রথমে কাশিমবাজার ও তার পরে কলকাতা আক্রমণ এবং ব্রিটিশদের 'সাময়িক' পরাজয়।  ওই ডালহৌসি চত্বরের  ফোর্ট উইলিয়াম কামান দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেয় সিরাজের বাহিনী এবং তারপরেই সে কুখ্যাত 'অন্ধ কুপ হত্যা' বা 'Black Hole Incident'।
'ব্ল্যাক হোল? পড়েছিলাম মনে হচ্ছে......।'
'হ্যাঁ... পড়েছিলেন বইকি ইতিহাস বইতে। তৎকালীন কলকাতায় কোম্পানির কর্ণধার হলওয়েল সাহেব সমেত ১৪৫ জন কোম্পানি সৈনিকদের...... একটি গোটা রাত সিরাজের নির্দেশে নাকি বন্দী করে রাখা হয়েছিল একটি অতি সংকীর্ণ ঘরের মধ্যে। শ্বাসরোধ হয়ে মারা যায় প্রায় ১২৩ জন ব্রিটিশ সৈন্য (সংখ্যার হিসেব তর্ক সাপেক্ষ!)।এই নৃশংস হত্যাকাহিনির খবর গোটা ব্রিটেনকে নাড়িয়ে দেয়। এবং সেই রোষেই ব্রিটেন তাদের অন্যতম সেরা কম্যান্ডার রবার্ট ক্লাইভকে পাঠায় কলকাতা পুনরুদ্ধারের জন্য।'  
'ঠিক... ঠিক...। এইবার মনে পড়েছে। টীকা আসত...... ৪ নম্বরের।'
'তবে ঘটনাটা কতটা সত্যি... সে নিয়ে মতবিরোধ আছে কিন্তু। বলা হয় যে সিরাজের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করতেই এই ব্ল্যাক হোলের গল্প বানানো হয়েছিল।'  
'অ্যাঁ... বলেন কি? ইতিহাস বইতে ভুল ছিল?'
'দেখুন... ভুল বা ঠিক দিয়ে ইতিহাসকে বিচার করতে যাওয়াটা বোকামি। আসলে সেই সময়কার ইতিহাস যতটুকু লেখা হয়েছে...... সব লিখেছেন ব্রিটিশ সাহেবরা। আর তারা কতটা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে লিখেছেন বা লেখেননি...... সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। আর এইটা যেকোনো ইতিহাসের ক্ষেত্রেই সত্যি। তথ্য বা ক্লু এর কোনটা আপনি বিশ্বাস করবেন আর কতটা বিশ্বাস করবেন..... সেটা নির্ভর করবে আপনার যুক্তি নির্ভর মননশীলতা আর বিচারবুদ্ধির ওপর.........মানে বিজ্ঞানীরা যেরকম করেন। ইতিহাসেরও যে একটি বিজ্ঞান আছে মশাই......আর সেখানে আপনিই হোমস...... বা আপনিই ব্যোমকেশ.......। “There is nothing more deceptive than an obvious fact!" .........কি বুঝলেন?'
'কিছুই বুঝলাম না...... বিশেষকরে আপনার এই শেষের কথাগুলোর মাথামুণ্ডু.......। আসলে আমার মাথায় একটা অন্য জিনিস ঘুরছে......।'  
'কি?'
'বলছি এই ক্লাইভ কি ঐ দমদমের ক্লাইভ হাউসের ক্লাইভ? মানে আমার শ্বশুরবাড়ি দমদমে কিনা......তাই...।'
'আলবাত... ক্লাইভ হাউসে লর্ড ক্লাইভ থাকতেন। কলকাতার অন্যতম প্রাচীন বসতবাড়ি ওইটি।'
'দমদমে থাকতেন? এত দূরে...? মানে উনি তো এই ডালহৌসি চত্বরের ধারে পাশে কোথাও......। মানে ওই আমলে দমদম-ডালহৌসি ডেলি পাসেঞ্জারির ঝক্কি......। মোটরগাড়িতেও তো অনেকক্ষণ......।'  
'বাঃ। দারুণ প্রশ্ন। খুব সম্ভবত ক্লাইভের অধুনা কলকাতা থেকে দূরে থাকার কারণ ছিল কলকাতার দূষিত আবহাওয়া আর প্লেগের মত মারণ রোগের মহামারি। পরবর্তীকালের অধিকাংশ গভর্নর জেনারেলদেরও অধুনা কলকাতার থেকে দূরে মানে গার্ডেন রিচ বা কাশিমবাজারে থাকতে দেখা গেছে। আর মোটর গাড়ি কি বলছেন মশাই? কলকাতায় মোটরগাড়ি আসে ১৮৯৬-এ...... আর তার আগে ছিল ঘোড়ায় টানা ট্রামগাড়ি। তবে ক্লাইভের সময় ঘোড়া গাড়ি, গরুর গাড়ি আর পালকি ছাড়া কোনও অপশন ছিল বলে তো মনে হয় না।'
'বাবাহ... ওসব করে দমদম টু ডালহৌসি ডেলি পাসেঞ্জারি --- সাহেবের এলেম ছিল মশাই।'
'এলেম বলে এলেম। আর সেই এলেমের বশেই ক্লাইভের নেতৃত্বে এক বছরের মধ্যেই ব্রিটিশরা বিখ্যাত 'পলাশীর যুদ্ধে' সিরাজকে হারিয়ে কলকাতা পুনরুদ্ধার করে এবং শুরু হয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তৃতীয় ইনিংস ইন বেঙ্গল, ১৮৫৮ অবধি। ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৮, মানে এই একশ বছর কলকাতা হয়ে ওঠে নগর কলকাতা -- ডাক বাবস্থা, আদালত, টাঁকশাল, রাস্তাঘাট নির্মাণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বাবস্থা আরও কত কি। একে একে তৈরি হয়......এই ময়দানের পাশের নতুন ফোর্ট উইলিয়াম, রাইটার্স বিল্ডিং, ওল্ড সিলভার মিন্ট, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং আরও অনেককিছু। ইউরোপিয়ান ঘরানার আদলে সেজে ওঠে নগর কলকাতা।'
'বুঝেছি.........মানে কলকাতায় নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার পরেই কোম্পানি কলকাতার 'নগরোন্নায়ন' শুরু করে......। কলকাতাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায় আরও মুনাফা লুটবে বলে। Investment after assurance। পাক্কা বাবসাদার......।'  
'সে আর বলতে......। ব্যবসা মশাই...পুরোটাই ব্যবসা। জানেন কি...ওই সময় ব্রিটেনের এশিয়া থেকে আমদানির দুই তৃতীয়াংশ যেত বাংলা থেকে।'
'আরিব্বাস। বাংলার টাকায় ব্রিটেন চলছে। উফফ......... দারুণ লাগলো ভেবে। তবে আখেরে কলকাতার লাভই হল...... কি বলেন? এই রকম সাজানো শহর ভারতবর্ষে আর কটা আছে বলুন?......... সিটি অফ জয়'।
'সিটি অফ জয়? সে তো ১৯৮৫ তে Dominique Lapierre এর লেখা একটি নভেলের পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু ১৮০০-র গোড়ার দিকে এই শহরকে 'দ্য সিটি অফ জয়' বলা যেত কিনা......আমার ঘোর সন্দেহ আছে। বরং 'দ্য সিটি অফ আফিম' বা 'দ্য সিটি অফ স্মাগ্লারস' বললেও হয়ত অত্যুক্তি হতো না।'  
'অ্যাঁ'।  
'বুঝলেন না তো। আচ্ছা...... আপনাকে তিনটে ক্লু দিচ্ছি ---- কলকাতা, আফিমের যুদ্ধ আর আলুপোস্ত'।
'অ্যাঁ...... আলুপোস্ত? এবং তার সাথে যুদ্ধ ? এর থেকে বলতে পারতেন চন্দ্রবিন্দুর চ, বেড়ালের তালব্য শ, আর রুমালের মা......।'
'আছে মশাই আছে। বিস্তর যোগাযোগ আছে। আচ্ছা আপনি পোস্ত খান তো?'
'কি বলছেন মশাই! পোস্ত খাবো না? কলাইয়ের ডাল আর আলুপোস্ত আমার হট ফেবারিট। ফি রোববারে ওই দিয়ে এক থালা ভাত খেয়ে দুপুরে একটা ঘুম......... আহা।'
'পোস্ত কি বলুন তো?'
'পোস্ত দানা বলে তো। পোস্ত গাছের বীজ টিজ হবে বোধহয়।'
'আচ্ছা...... পোস্ততে পরে আসছি। আফিম কি জানেন তো?'
'কেন জানব না। নেশা করার জিনিস। আমার ঠাকুরদা......'
'হুম...... তবে আফিম কিন্তু নেশার বস্তু পরে......... আগে একটি ভেষজ ওষুধ। আফিমের চাষ বহু প্রাচীন .........সেই মেসোপটেমিয়ার যুগ থেকে...... ব্যথা কমানোর জন্যে এর ব্যবহার বহুল প্রচারিত ছিল। ধীরে ধীরে আফিম বা আফিমজাত অন্যান্য পদার্থ গুলির বহুল ব্যবহার...... নেশায় পরিণত হয়। আর নেশা কি জিনিস জানেন নিশ্চয়ই......। খাবার নয় ...... পৃথিবীর এক বিশাল গোষ্ঠী তখন এই আফিমের জন্যে পাগল।বিশেষত চিন দেশ। কারণ ওখানে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল।  আর সে কারণেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার দখল পাওয়ার পরই কলকাতা ও তার চারপাশে শুরু করে আফিমের চাষ এবং চড়া দামে আফিমের কালোবাজারি শুরু হয় চিন দেশের সাথে। কলকাতা তখন এই ব্রিটিশ কালোবাজারিদের পীঠস্থান......... খুন, হত্যা, রক্তপাত কিছুই বাদ ছিল না এই 'আফিম' বস্তুটিকে কেন্দ্র করে। আর এই কালোবাজারির আপাত সূত্রপাত যার মস্তিকপ্রসুত...... তার নাম ভিনসেন্ট ব্লেক --- জন্ম কলকাতায়। উনিশ বছর বয়স থেকে তুলোর আড়ালে আফিমের কালোবাজারি.........।'
'কি বললেন...... ভিনসেন...। উনিশ বছরের ছোকরা? কিভাবে...... কিভাবে?'
'ছাড়ুন মশাই ভিনসেন্ট কে... সে গল্প অন্য অন্যদিন। তবে এই কালোবাজারির কারণেই ১৮৩৮-১৮৬০ এর দশকে দু দুটো যুদ্ধ হয়ে গেছে চিন ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে। আফিমের বদলে নাকি জাহাজ ভরে রুপো আসত.........সত্যি-মিথ্যে জানি না। তাহলে কলকাতার পেছনে ব্রিটিশদের ঢালাও 'উন্নয়নের' কারণটা
কিছুটা বোঝা গেলো কি?'
'তা বুঝলুম বটে...... কিন্তু... আলুপোস্ত'?
'ও হ্যাঁ আলুপোস্ত! ........দেখুন আলু পর্তুগিজদের অবদান আর..... পোস্ত হল গিয়ে ওই আফিম (opium) গাছের ফল থেকে আফিম তৈরি করার পদ্ধতির একটি উপজাত..... যা ফেলে দেওয়া হতো। আর ব্রিটিশদের পাতে তো নৈব নৈব চ।'
'সে কি...... ফেলে দিত? আজ যা ৪৫০ টাকা কেজি...।'  
'আজ্ঞে হ্যাঁ স্যর। ব্রিটিশদের ওই ফেলে দেওয়া পোস্ত দানা বেটে পান্তা ভাতে খাওয়া শুরু করল তৎকালীন নিম্ন অভুক্ত বা অর্ধভুক্ত মানুষদের হাত ধরে। আর সেই পাত থেকে আপামর বাঙ্গালীর পাতে পোস্তর উত্থান...... সে আর এক ইতিহাস বটে।'  
'বলছি...... মানে ওই আফিমের বংশজাত বলেই কি পোস্ত খেয়ে ওই দুপুরে��� ভাতঘুমটা ওই রকম জম্পেশ......।'  
'সে জানিনা। তবে একথা জেনে রাখুন আজও অনেক দেশে এই আপনার প্রিয়তম পোস্ত নিষিদ্ধ।'
'মশাই...... শেষ প্রশ্ন। হোয়াট আবাউট বাংলার সাধারণ মানুষজন? তাদের ইতিহাসটা...।'
'তাদের কথা আর কোন ইতিহাসে লেখা হয় বলুন ! তারা বোধকরি ওই জাতপাত, ধর্ম আর গ্রাসাচ্ছাদনের তাদিগে ওই ত্রিভুজের মধ্যে ঘুরপাক খেয়েছে আর গতানুগতিক প্রক্রিয়ায় শোষিত এবং শাসিত হয়েছে। আলিনগর টু কলকাতা.........অলিতে গলিতে তারা ছিলেন এবং এখনও আছেন।'  
'আলিনগর?'
'ও হো...... বলতে ভুলে গেছি। প্রথমবার কলকাতা দখল করার পর...... নিজের দাদু অর্থাৎ নবাব আলীবর্দি খানের নাম অনুযায়ী, সিরাজ আমাদের এই শহরটারই নাম রেখেছিলেন আলিনগর।'    
**********
অলঙ্করণ ঃ শুভব্রত মজুমদার
0 notes