রমাদান মাস ১০ দিন রহমত,১০ দিন মাগফিরাত, ১০ দিন নাজাতের নাকি পুরো মাসই রহমত,নাজাত ও মাগফিরাত এর?
প্রথমত,১০ দিন ১০ দিন করে যেই ৩ ভাগে রমাদানকে ভাগ করা হয়েছে উক্ত হাদীসটি সনদের দিক থেকে দূর্বল।আমরা জানি হাদীসের বিশুদ্ধতা নির্ণয় করা হয় সনদ ও মতন এর দিক বিচার করে। উক্ত হাদীসের সনদ যেমন দূর্বল ঠিক মতন একেবারেই অগ্রহনযোগ্য যা সহীহ হাদীসের বিপরীত।
কারণ সহীহ হাদীস যেখানে বলছে রমাদান এর পুরো মাসই রহমত,মাগফিরাত ও নাজাতের। সেখানে যদি আপনি বলেন ১০ দিন রহমতের তাহলে নবীর কথা ২ রকমের হয়ে যায়। এর মতন গরমিল হয়ে যায়। সুতরাং মতন এর দিক বিচার করলে হাদীসটি সম্পূর্ণ জাল হিসেবে বিবেচিত হবে।
আমি ০২ টি সহীহ হাদীস উক্ত জাল হাদীসের বিপরীতে দিচ্ছি যেখানে পুরো মাসের কথাই উল্লেখ আছে,
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন রমজান মাসের প্রথম রাত আসে, তখন শয়তান ও অভিশপ্ত জিনদের শৃংখলিত করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, তার একটি দরজাও খোলা হয় না, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এর একটি দরজাও বন্ধ হয় না এবং একজন ঘোষক ডেকে বলেন, হে সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি! অগ্রসর হও, হে অসৎকর্মপরায়ণ! থেমে যাও। আল্লাহ্ (রমযানের) প্রতিটি রাতে অসংখ্য লোককে জাহান্নাম থেকে নাজাত দেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৬৪২)
অপর আর একটি হাদীস সহীহ মুসলিম এর,
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমাযান মাস উপস্থিত হলে রহমতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শাইত্বনগুলোকে শিকলে আবদ্ধ করা হয়।(মুসলিমঃ ২৩৮৬)
সুতরাং এই ব্যাপারে সহীহ হাদীস যেখানে বলছে পুরো মাস রহমত নাজাতের সেখানে উক্ত ১০ দিনের কথাটি মতন এর দিক থেকে ভিত্তিহীন হয়ে যায়।
আর পুরো মাস রহমত,নাজাত ও মাগফিরাত এর হলেই তো আমাদের লাভ বেশি! লাভ যেখানে বেশি দিয়েছেন আল্লাহ সেখানে কেন আপনি কম খোঁজার চেষ্টা করছেন তাও আবার জাল হাদীস দিয়ে।
আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ বুজ দান করুক।সকল প্রকার জাল ও বানোয়াট হাদীস বর্ণনা থেকে দূরে রাখুক।কারণ,বিশ্বনবী (সাঃ) বলেছেন,
"যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যা বলবে তার আবাসস্হল হবে জাহান্নামে।"(সহীহ বুখারী-১/৫২)
সুতরাং হাদীস বলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করি।শুধু আবহমানকাল থেকে লোকমুখে প্রচলিত হলেই সবকিছু হাদীস হয়ে যায় না।
আমাদের কমন একটি কথা সারাজীবন শুনে আসলাম।আরে ভাই,সারাজীবন শুনে আসলাম এই কথার মূল্য বেশী না রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কথার মূল্য বেশি???